সিয়াম শব্দটি কোরআনে মোট 14 বার এসছে
২:১৮৩,১৮৪,১৮৫,১৮৭(২),১৯৬(২) , ৪:৯২, ৫:৮৯,৯৫, ১৯:২৬, ৫৮:০৪, ৩৩:৩৫(২), এই মোট 14 বার।
01
২ : ১৮৩ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا كُتِبَ عَلَیۡكُمُ الصِّیَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۳﴾ۙیایها الذین امنوا كتب علیكم الصیام كما كتب علی الذین من قبلكم لعلكم تتقون ﴿۱۸۳﴾
হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।
02
২ : ১৮৪ اَیَّامًا مَّعۡدُوۡدٰتٍ ؕ فَمَنۡ كَانَ مِنۡكُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ وَ عَلَی الَّذِیۡنَ یُطِیۡقُوۡنَهٗ فِدۡیَۃٌ طَعَامُ مِسۡكِیۡنٍ ؕ فَمَنۡ تَطَوَّعَ خَیۡرًا فَهُوَ خَیۡرٌ لَّهٗ ؕ وَ اَنۡ تَصُوۡمُوۡا خَیۡرٌ لَّكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۴﴾ایاما معدودت فمن كان منكم مریضا او علی سفر فعدۃ من ایام اخر و علی الذین یطیقونهٗ فدیۃ طعام مسكین فمن تطوع خیرا فهو خیر لهٗ و ان تصوموا خیر لكم ان كنتم تعلمون ﴿۱۸۴﴾
নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদয়া- একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর সিয়াম পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জান।
04
২ : ১৮৫ شَهۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡهِ الۡقُرۡاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡهُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَهِدَ مِنۡكُمُ الشَّهۡرَ فَلۡیَصُمۡهُ ؕ وَ مَنۡ كَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰهُ بِكُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِكُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُكۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىكُمۡ وَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾شهر رمضان الذی انزل فیه القران هدی للناس و بینت من الهدی و الفرقان فمن شهد منكم الشهر فلیصمه و من كان مریضا او علی سفر فعدۃ من ایام اخر یرید الله بكم الیسر و لا یرید بكم العسر و لتكملوا العدۃ و لتكبروا الله علی ما هدىكم و لعلكم تشكرون ﴿۱۸۵﴾
রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর
05
২ : ১৮৭ اُحِلَّ لَكُمۡ لَیۡلَۃَ الصِّیَامِ الرَّفَثُ اِلٰی نِسَآئِكُمۡ ؕ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ؕ عَلِمَ اللّٰهُ اَنَّكُمۡ كُنۡتُمۡ تَخۡتَانُوۡنَ اَنۡفُسَكُمۡ فَتَابَ عَلَیۡكُمۡ وَ عَفَا عَنۡكُمۡ ۚ فَالۡـٰٔنَ بَاشِرُوۡهُنَّ وَ ابۡتَغُوۡا مَا كَتَبَ اللّٰهُ لَكُمۡ ۪ وَ كُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَكُمُ الۡخَیۡطُ الۡاَبۡیَضُ مِنَ الۡخَیۡطِ الۡاَسۡوَدِ مِنَ الۡفَجۡرِ۪ ثُمَّ اَتِمُّوا الصِّیَامَ اِلَی الَّیۡلِ ۚ وَ لَا تُبَاشِرُوۡهُنَّ وَ اَنۡتُمۡ عٰكِفُوۡنَ ۙ فِی الۡمَسٰجِدِ ؕ تِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ فَلَا تَقۡرَبُوۡهَا ؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ اٰیٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ یَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۷﴾احل لكم لیلۃ الصیام الرفث الی نسآئكم هن لباس لكم و انتم لباس لهن علم الله انكم كنتم تختانون انفسكم فتاب علیكم و عفا عنكم فالـٔن باشروهن و ابتغوا ما كتب الله لكم و كلوا و اشربوا حتی یتبین لكم الخیط الابیض من الخیط الاسود من الفجر ثم اتموا الصیام الی الیل و لا تباشروهن و انتم عكفون فی المسجد تلك حدود الله فلا تقربوها كذلك یبین الله ایتهٖ للناس لعلهم یتقون ﴿۱۸۷﴾
সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে।
06
২ : ১৯৬ وَ اَتِمُّوا الۡحَجَّ وَ الۡعُمۡرَۃَ لِلّٰهِ ؕ فَاِنۡ اُحۡصِرۡتُمۡ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡیِ ۚ وَ لَا تَحۡلِقُوۡا رُءُوۡسَكُمۡ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡهَدۡیُ مَحِلَّهٗ ؕ فَمَنۡ كَانَ مِنۡكُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ بِهٖۤ اَذًی مِّنۡ رَّاۡسِهٖ فَفِدۡیَۃٌ مِّنۡ صِیَامٍ اَوۡ صَدَقَۃٍ اَوۡ نُسُكٍ ۚ فَاِذَاۤ اَمِنۡتُمۡ ٝ فَمَنۡ تَمَتَّعَ بِالۡعُمۡرَۃِ اِلَی الۡحَجِّ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡیِ ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ فِی الۡحَجِّ وَ سَبۡعَۃٍ اِذَا رَجَعۡتُمۡ ؕ تِلۡكَ عَشَرَۃٌ كَامِلَۃٌ ؕ ذٰلِكَ لِمَنۡ لَّمۡ یَكُنۡ اَهۡلُهٗ حَاضِرِی الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۱۹۶﴾و اتموا الحج و العمرۃ لله فان احصرتم فما استیسر من الهدی و لا تحلقوا رءوسكم حتی یبلغ الهدی محلهٗ فمن كان منكم مریضا او بهٖ اذی من راسهٖ ففدیۃ من صیام او صدقۃ او نسك فاذا امنتم ٝ فمن تمتع بالعمرۃ الی الحج فما استیسر من الهدی فمن لم یجد فصیام ثلثۃ ایام فی الحج و سبعۃ اذا رجعتم تلك عشرۃ كاملۃ ذلك لمن لم یكن اهلهٗ حاضری المسجد الحرام و اتقوا الله و اعلموا ان الله شدید العقاب ﴿۱۹۶﴾
আর হজ ও উমরা আল্লাহর জন্য পূর্ণ কর। অতঃপর যদি তোমরা আটকে পড় তবে যে পশু সহজ হবে (তা যবেহ কর)। আর তোমরা তোমাদের মাথা মুন্ডন করো না, যতক্ষণ না পশু তার যথাস্থানে পৌঁছে। আর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ কিংবা তার মাথায় যদি কোন কষ্ট থাকে তবে সিয়াম কিংবা সদাকা অথবা পশু যবেহ এর মাধ্যমে ফিদয়া দেবে। আর যখন তোমরা নিরাপদ হবে তখন যে ব্যক্তি উমরার পর হজ সম্পাদনপূর্বক তামাত্তু করবে, তবে যে পশু সহজ হবে, তা যবেহ করবে। কিন্তু যে তা পাবে না তাকে হজে তিন দিন এবং যখন তোমরা ফিরে যাবে, তখন সাত দিন সিয়াম পালন করবে। এই হল পূর্ণ দশ। এই বিধান তার জন্য, যার পরিবার মাসজিদুল হারামের অধিবাসী নয়। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ আযাবদানে কঠোর।
07
৪ : ৯২ وَ مَا كَانَ لِمُؤۡمِنٍ اَنۡ یَّقۡتُلَ مُؤۡمِنًا اِلَّا خَطَـًٔا ۚ وَ مَنۡ قَتَلَ مُؤۡمِنًا خَطَـًٔا فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ وَّ دِیَۃٌ مُّسَلَّمَۃٌ اِلٰۤی اَهۡلِهٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّصَّدَّقُوۡا ؕ فَاِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍ عَدُوٍّ لَّكُمۡ وَ هُوَ مُؤۡمِنٌ فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ ؕ وَ اِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍۭ بَیۡنَكُمۡ وَ بَیۡنَهُمۡ مِّیۡثَاقٌ فَدِیَۃٌ مُّسَلَّمَۃٌ اِلٰۤی اَهۡلِهٖ وَ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَهۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ ۫ تَوۡبَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلِیۡمًا حَكِیۡمًا ﴿۹۲﴾و ما كان لمؤمن ان یقتل مؤمنا الا خطـٔا و من قتل مؤمنا خطـٔا فتحریر رقبۃ مؤمنۃ و دیۃ مسلمۃ الی اهلهٖ الا ان یصدقوا فان كان من قوم عدو لكم و هو مؤمن فتحریر رقبۃ مؤمنۃ و ان كان من قوم بینكم و بینهم میثاق فدیۃ مسلمۃ الی اهلهٖ و تحریر رقبۃ مؤمنۃ فمن لم یجد فصیام شهرین متتابعین توبۃ من الله و كان الله علیما حكیما ﴿۹۲﴾
আর কোন মুমিনের কাজ নয় অন্য মুমিনকে হত্যা করা, তবে ভুলবশত (হলে ভিন্ন কথা)। যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে এবং দিয়াত (রক্ত পণ দিতে হবে) যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিজনদের কাছে। তবে তারা যদি সদাকা (ক্ষমা) করে দেয় (তাহলে দিতে হবে না)। আর সে যদি তোমাদের শত্রু কওমের হয় এবং সে মুমিন, তাহলে একজন মুমিন দাস মুক্ত করবে। আর যদি এমন কওমের হয় যাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সন্ধিচুক্তি রয়েছে তাহলে দিয়াত দিতে হবে, যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিবারের কাছে এবং একজন মুমিন দাস মুক্ত করতে হবে। তবে যদি না পায় তাহলে একাধারে দু’মাস সিয়াম পালন করবে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমাস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
08
৫ : ৮৯ لَا یُؤَاخِذُكُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِكُمۡ وَ لٰكِنۡ یُّؤَاخِذُكُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَكَفَّارَتُهٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰكِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَهۡلِیۡكُمۡ اَوۡ كِسۡوَتُهُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِكَ كَفَّارَۃُ اَیۡمَانِكُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَكُمۡ ؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ لَكُمۡ اٰیٰتِهٖ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾لا یؤاخذكم الله باللغو فی ایمانكم و لكن یؤاخذكم بما عقدتم الایمان فكفارتهٗ اطعام عشرۃ مسكین من اوسط ما تطعمون اهلیكم او كسوتهم او تحریر رقبۃ فمن لم یجد فصیام ثلثۃ ایام ذلك كفارۃ ایمانكم اذا حلفتم و احفظوا ایمانكم كذلك یبین الله لكم ایتهٖ لعلكم تشكرون ﴿۸۹﴾
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর
09
৫ : ৯৫ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقۡتُلُوا الصَّیۡدَ وَ اَنۡتُمۡ حُرُمٌ ؕ وَ مَنۡ قَتَلَهٗ مِنۡكُمۡ مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآءٌ مِّثۡلُ مَا قَتَلَ مِنَ النَّعَمِ یَحۡكُمُ بِهٖ ذَوَا عَدۡلٍ مِّنۡكُمۡ هَدۡیًۢا بٰلِغَ الۡكَعۡبَۃِ اَوۡ كَفَّارَۃٌ طَعَامُ مَسٰكِیۡنَ اَوۡ عَدۡلُ ذٰلِكَ صِیَامًا لِّیَذُوۡقَ وَبَالَ اَمۡرِهٖ ؕ عَفَا اللّٰهُ عَمَّا سَلَفَ ؕ وَ مَنۡ عَادَ فَیَنۡتَقِمُ اللّٰهُ مِنۡهُ ؕ وَ اللّٰهُ عَزِیۡزٌ ذُو انۡتِقَامٍ ﴿۹۵﴾یایها الذین امنوا لا تقتلوا الصید و انتم حرم و من قتلهٗ منكم متعمدا فجزآء مثل ما قتل من النعم یحكم بهٖ ذوا عدل منكم هدیا بلغ الكعبۃ او كفارۃ طعام مسكین او عدل ذلك صیاما لیذوق وبال امرهٖ عفا الله عما سلف و من عاد فینتقم الله منه و الله عزیز ذو انتقام ﴿۹۵﴾
হে মুমিনগণ, ইহরামে থাকা অবস্থায় তোমরা শিকারকে হত্যা করো না এবং যে তোমাদের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে তা হত্যা করবে তার বিনিময় হল যা হত্যা করেছে, তার অনুরূপ গৃহপালিত পশু, যার ফয়সালা করবে তোমাদের মধ্যে দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোক- কুরবানীর জন্তু হিসাবে কা’বায় পৌঁছতে হবে। অথবা মিসকীনকে খাবার দানের কাফ্ফারা কিংবা সমসংখ্যক সিয়াম পালন, যাতে সে নিজ কর্মের শাস্তি আস্বাদন করে। যা গত হয়েছে তা আল্লাহ ক্ষমা করেছেন। যে পুনরায় করবে আল্লাহ তার থেকে প্রতিশোধ নেবেন। আর আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
10
১৯ : ২৬ فَكُلِیۡ وَ اشۡرَبِیۡ وَ قَرِّیۡ عَیۡنًا ۚ فَاِمَّا تَرَیِنَّ مِنَ الۡبَشَرِ اَحَدًا ۙ فَقُوۡلِیۡۤ اِنِّیۡ نَذَرۡتُ لِلرَّحۡمٰنِ صَوۡمًا فَلَنۡ اُكَلِّمَ الۡیَوۡمَ اِنۡسِیًّا ﴿ۚ۲۶﴾فكلی و اشربی و قری عینا فاما ترین من البشر احدا فقولی انی نذرت للرحمن صوما فلن اكلم الیوم انسیا ﴿۲۶﴾
‘অতঃপর তুমি খাও, পান কর এবং চোখ জুড়াও। আর যদি তুমি কোন লোককে দেখতে পাও তাহলে বলে দিও, ‘আমি পরম করুণাময়ের জন্য চুপ থাকার মানত করেছি। অতএব আজ আমি কোন মানুষের সাথে কিছুতেই কথা বলব না’।
11
৫৮ : ৪ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَهۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّتَمَآسَّا ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَسۡتَطِعۡ فَاِطۡعَامُ سِتِّیۡنَ مِسۡكِیۡنًا ؕ ذٰلِكَ لِتُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰهِ وَ رَسُوۡلِهٖ ؕ وَ تِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ ؕ وَ لِلۡكٰفِرِیۡنَ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۴﴾فمن لم یجد فصیام شهرین متتابعین من قبل ان یتمآسا فمن لم یستطع فاطعام ستین مسكینا ذلك لتؤمنوا بالله و رسولهٖ و تلك حدود الله و للكفرین عذاب الیم ﴿۴﴾
কিন্তু যে তা পাবে না, সে লাগাতার দু’মাস সিয়াম পালন করবে, একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে। আর যে (এরূপ করার) সামর্থ্য রাখে না সে ষাটজন মিসকীনকে খাবার খাওয়াবে। এ বিধান এ জন্য যে, তোমরা যাতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন। আর এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা এবং কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
12
৩৩ : ৩৫ اِنَّ الۡمُسۡلِمِیۡنَ وَ الۡمُسۡلِمٰتِ وَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡقٰنِتٰتِ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الصّٰدِقٰتِ وَ الصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰبِرٰتِ وَ الۡخٰشِعِیۡنَ وَ الۡخٰشِعٰتِ وَ الۡمُتَصَدِّقِیۡنَ وَ الۡمُتَصَدِّقٰتِ وَ الصَّآئِمِیۡنَ وَ الصّٰٓئِمٰتِ وَ الۡحٰفِظِیۡنَ فُرُوۡجَهُمۡ وَ الۡحٰفِظٰتِ وَ الذّٰكِرِیۡنَ اللّٰهَ كَثِیۡرًا وَّ الذّٰكِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا ﴿۳۵﴾ان المسلمین و المسلمت و المؤمنین و المؤمنت و القنتین و القنتت و الصدقین و الصدقت و الصبرین و الصبرت و الخشعین و الخشعت و المتصدقین و المتصدقت و الصآئمین و الصٓئمت و الحفظین فروجهم و الحفظت و الذكرین الله كثیرا و الذكرت اعد الله لهم مغفرۃ و اجرا عظیما ﴿۳۵﴾
নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন।
সিয়াম বিষয়ে কিছু আলোচনা….
২:১৮৩ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا كُتِبَ عَلَیۡكُمُ الصِّیَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۳﴾ۙیایها الذین امنوا كتب علیكم الصیام كما كتب علی الذین من قبلكم لعلكم تتقون ﴿۱۸۳﴾
হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।
২:১৮৫ شَهۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡهِ الۡقُرۡاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡهُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَهِدَ مِنۡكُمُ الشَّهۡرَ فَلۡیَصُمۡهُ ؕ وَ مَنۡ كَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰهُ بِكُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِكُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُكۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىكُمۡ وَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾شهر رمضان الذی انزل فیه القران هدی للناس و بینت من الهدی و الفرقان فمن شهد منكم الشهر فلیصمه و من كان مریضا او علی سفر فعدۃ من ایام اخر یرید الله بكم الیسر و لا یرید بكم العسر و لتكملوا العدۃ و لتكبروا الله علی ما هدىكم و لعلكم تشكرون ﴿۱۸۵﴾
রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।
২:১৮৭ اُحِلَّ لَكُمۡ لَیۡلَۃَ الصِّیَامِ الرَّفَثُ اِلٰی نِسَآئِكُمۡ ؕ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ؕ عَلِمَ اللّٰهُ اَنَّكُمۡ كُنۡتُمۡ تَخۡتَانُوۡنَ اَنۡفُسَكُمۡ فَتَابَ عَلَیۡكُمۡ وَ عَفَا عَنۡكُمۡ ۚ فَالۡـٰٔنَ بَاشِرُوۡهُنَّ وَ ابۡتَغُوۡا مَا كَتَبَ اللّٰهُ لَكُمۡ ۪ وَ كُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَكُمُ الۡخَیۡطُ الۡاَبۡیَضُ مِنَ الۡخَیۡطِ الۡاَسۡوَدِ مِنَ الۡفَجۡرِ۪ ثُمَّ اَتِمُّوا الصِّیَامَ اِلَی الَّیۡلِ ۚ وَ لَا تُبَاشِرُوۡهُنَّ وَ اَنۡتُمۡ عٰكِفُوۡنَ ۙ فِی الۡمَسٰجِدِ ؕ تِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ فَلَا تَقۡرَبُوۡهَا ؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ اٰیٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ یَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۷﴾احل لكم لیلۃ الصیام الرفث الی نسآئكم هن لباس لكم و انتم لباس لهن علم الله انكم كنتم تختانون انفسكم فتاب علیكم و عفا عنكم فالـٔن باشروهن و ابتغوا ما كتب الله لكم و كلوا و اشربوا حتی یتبین لكم الخیط الابیض من الخیط الاسود من الفجر ثم اتموا الصیام الی الیل و لا تباشروهن و انتم عكفون فی المسجد تلك حدود الله فلا تقربوها كذلك یبین الله ایتهٖ للناس لعلهم یتقون ﴿۱۸۷﴾
সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে।
২:১৮৪ اَیَّامًا مَّعۡدُوۡدٰتٍ ؕ فَمَنۡ كَانَ مِنۡكُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ وَ عَلَی الَّذِیۡنَ یُطِیۡقُوۡنَهٗ فِدۡیَۃٌ طَعَامُ مِسۡكِیۡنٍ ؕ فَمَنۡ تَطَوَّعَ خَیۡرًا فَهُوَ خَیۡرٌ لَّهٗ ؕ وَ اَنۡ تَصُوۡمُوۡا خَیۡرٌ لَّكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۴﴾ایاما معدودت فمن كان منكم مریضا او علی سفر فعدۃ من ایام اخر و علی الذین یطیقونهٗ فدیۃ طعام مسكین فمن تطوع خیرا فهو خیر لهٗ و ان تصوموا خیر لكم ان كنتم تعلمون ﴿۱۸۴﴾
নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদয়া- একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর সিয়াম পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জান।
২:১৯৬ وَ اَتِمُّوا الۡحَجَّ وَ الۡعُمۡرَۃَ لِلّٰهِ ؕ فَاِنۡ اُحۡصِرۡتُمۡ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡیِ ۚ وَ لَا تَحۡلِقُوۡا رُءُوۡسَكُمۡ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡهَدۡیُ مَحِلَّهٗ ؕ فَمَنۡ كَانَ مِنۡكُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ بِهٖۤ اَذًی مِّنۡ رَّاۡسِهٖ فَفِدۡیَۃٌ مِّنۡ صِیَامٍ اَوۡ صَدَقَۃٍ اَوۡ نُسُكٍ ۚ فَاِذَاۤ اَمِنۡتُمۡ ٝ فَمَنۡ تَمَتَّعَ بِالۡعُمۡرَۃِ اِلَی الۡحَجِّ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡیِ ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ فِی الۡحَجِّ وَ سَبۡعَۃٍ اِذَا رَجَعۡتُمۡ ؕ تِلۡكَ عَشَرَۃٌ كَامِلَۃٌ ؕ ذٰلِكَ لِمَنۡ لَّمۡ یَكُنۡ اَهۡلُهٗ حَاضِرِی الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۱۹۶﴾و اتموا الحج و العمرۃ لله فان احصرتم فما استیسر من الهدی و لا تحلقوا رءوسكم حتی یبلغ الهدی محلهٗ فمن كان منكم مریضا او بهٖ اذی من راسهٖ ففدیۃ من صیام او صدقۃ او نسك فاذا امنتم ٝ فمن تمتع بالعمرۃ الی الحج فما استیسر من الهدی فمن لم یجد فصیام ثلثۃ ایام فی الحج و سبعۃ اذا رجعتم تلك عشرۃ كاملۃ ذلك لمن لم یكن اهلهٗ حاضری المسجد الحرام و اتقوا الله و اعلموا ان الله شدید العقاب ﴿۱۹۶﴾
আর হজ ও উমরা আল্লাহর জন্য পূর্ণ কর। অতঃপর যদি তোমরা আটকে পড় তবে যে পশু সহজ হবে (তা যবেহ কর)। আর তোমরা তোমাদের মাথা মুন্ডন করো না, যতক্ষণ না পশু তার যথাস্থানে পৌঁছে। আর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ কিংবা তার মাথায় যদি কোন কষ্ট থাকে তবে সিয়াম কিংবা সদাকা অথবা পশু যবেহ এর মাধ্যমে ফিদয়া দেবে। আর যখন তোমরা নিরাপদ হবে তখন যে ব্যক্তি উমরার পর হজ সম্পাদনপূর্বক তামাত্তু করবে, তবে যে পশু সহজ হবে, তা যবেহ করবে। কিন্তু যে তা পাবে না তাকে হজে তিন দিন এবং যখন তোমরা ফিরে যাবে, তখন সাত দিন সিয়াম পালন করবে। এই হল পূর্ণ দশ। এই বিধান তার জন্য, যার পরিবার মাসজিদুল হারামের অধিবাসী নয়। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ আযাবদানে কঠোর।
৪:৯২ وَ مَا كَانَ لِمُؤۡمِنٍ اَنۡ یَّقۡتُلَ مُؤۡمِنًا اِلَّا خَطَـًٔا ۚ وَ مَنۡ قَتَلَ مُؤۡمِنًا خَطَـًٔا فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ وَّ دِیَۃٌ مُّسَلَّمَۃٌ اِلٰۤی اَهۡلِهٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّصَّدَّقُوۡا ؕ فَاِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍ عَدُوٍّ لَّكُمۡ وَ هُوَ مُؤۡمِنٌ فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ ؕ وَ اِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍۭ بَیۡنَكُمۡ وَ بَیۡنَهُمۡ مِّیۡثَاقٌ فَدِیَۃٌ مُّسَلَّمَۃٌ اِلٰۤی اَهۡلِهٖ وَ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَهۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ ۫ تَوۡبَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلِیۡمًا حَكِیۡمًا ﴿۹۲﴾و ما كان لمؤمن ان یقتل مؤمنا الا خطـٔا و من قتل مؤمنا خطـٔا فتحریر رقبۃ مؤمنۃ و دیۃ مسلمۃ الی اهلهٖ الا ان یصدقوا فان كان من قوم عدو لكم و هو مؤمن فتحریر رقبۃ مؤمنۃ و ان كان من قوم بینكم و بینهم میثاق فدیۃ مسلمۃ الی اهلهٖ و تحریر رقبۃ مؤمنۃ فمن لم یجد فصیام شهرین متتابعین توبۃ من الله و كان الله علیما حكیما ﴿۹۲﴾
আর কোন মুমিনের কাজ নয় অন্য মুমিনকে হত্যা করা, তবে ভুলবশত (হলে ভিন্ন কথা)। যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে এবং দিয়াত (রক্ত পণ দিতে হবে) যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিজনদের কাছে। তবে তারা যদি সদাকা (ক্ষমা) করে দেয় (তাহলে দিতে হবে না)। আর সে যদি তোমাদের শত্রু কওমের হয় এবং সে মুমিন, তাহলে একজন মুমিন দাস মুক্ত করবে। আর যদি এমন কওমের হয় যাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সন্ধিচুক্তি রয়েছে তাহলে দিয়াত দিতে হবে, যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিবারের কাছে এবং একজন মুমিন দাস মুক্ত করতে হবে। তবে যদি না পায় তাহলে একাধারে দু’মাস সিয়াম পালন করবে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমাস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
৫:৮৯ لَا یُؤَاخِذُكُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِكُمۡ وَ لٰكِنۡ یُّؤَاخِذُكُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَكَفَّارَتُهٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰكِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَهۡلِیۡكُمۡ اَوۡ كِسۡوَتُهُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِكَ كَفَّارَۃُ اَیۡمَانِكُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَكُمۡ ؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ لَكُمۡ اٰیٰتِهٖ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾لا یؤاخذكم الله باللغو فی ایمانكم و لكن یؤاخذكم بما عقدتم الایمان فكفارتهٗ اطعام عشرۃ مسكین من اوسط ما تطعمون اهلیكم او كسوتهم او تحریر رقبۃ فمن لم یجد فصیام ثلثۃ ایام ذلك كفارۃ ایمانكم اذا حلفتم و احفظوا ایمانكم كذلك یبین الله لكم ایتهٖ لعلكم تشكرون ﴿۸۹﴾
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর।
৫:৯৫ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقۡتُلُوا الصَّیۡدَ وَ اَنۡتُمۡ حُرُمٌ ؕ وَ مَنۡ قَتَلَهٗ مِنۡكُمۡ مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآءٌ مِّثۡلُ مَا قَتَلَ مِنَ النَّعَمِ یَحۡكُمُ بِهٖ ذَوَا عَدۡلٍ مِّنۡكُمۡ هَدۡیًۢا بٰلِغَ الۡكَعۡبَۃِ اَوۡ كَفَّارَۃٌ طَعَامُ مَسٰكِیۡنَ اَوۡ عَدۡلُ ذٰلِكَ صِیَامًا لِّیَذُوۡقَ وَبَالَ اَمۡرِهٖ ؕ عَفَا اللّٰهُ عَمَّا سَلَفَ ؕ وَ مَنۡ عَادَ فَیَنۡتَقِمُ اللّٰهُ مِنۡهُ ؕ وَ اللّٰهُ عَزِیۡزٌ ذُو انۡتِقَامٍ ﴿۹۵﴾یایها الذین امنوا لا تقتلوا الصید و انتم حرم و من قتلهٗ منكم متعمدا فجزآء مثل ما قتل من النعم یحكم بهٖ ذوا عدل منكم هدیا بلغ الكعبۃ او كفارۃ طعام مسكین او عدل ذلك صیاما لیذوق وبال امرهٖ عفا الله عما سلف و من عاد فینتقم الله منه و الله عزیز ذو انتقام ﴿۹۵﴾
হে মুমিনগণ, ইহরামে থাকা অবস্থায় তোমরা শিকারকে হত্যা করো না এবং যে তোমাদের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে তা হত্যা করবে তার বিনিময় হল যা হত্যা করেছে, তার অনুরূপ গৃহপালিত পশু, যার ফয়সালা করবে তোমাদের মধ্যে দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোক- কুরবানীর জন্তু হিসাবে কা’বায় পৌঁছতে হবে। অথবা মিসকীনকে খাবার দানের কাফ্ফারা কিংবা সমসংখ্যক সিয়াম পালন, যাতে সে নিজ কর্মের শাস্তি আস্বাদন করে। যা গত হয়েছে তা আল্লাহ ক্ষমা করেছেন। যে পুনরায় করবে আল্লাহ তার থেকে প্রতিশোধ নেবেন। আর আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
১৯:২৬ فَكُلِیۡ وَ اشۡرَبِیۡ وَ قَرِّیۡ عَیۡنًا ۚ فَاِمَّا تَرَیِنَّ مِنَ الۡبَشَرِ اَحَدًا ۙ فَقُوۡلِیۡۤ اِنِّیۡ نَذَرۡتُ لِلرَّحۡمٰنِ صَوۡمًا فَلَنۡ اُكَلِّمَ الۡیَوۡمَ اِنۡسِیًّا ﴿ۚ۲۶﴾فكلی و اشربی و قری عینا فاما ترین من البشر احدا فقولی انی نذرت للرحمن صوما فلن اكلم الیوم انسیا ﴿۲۶﴾
‘অতঃপর তুমি খাও, পান কর এবং চোখ জুড়াও। আর যদি তুমি কোন লোককে দেখতে পাও তাহলে বলে দিও, ‘আমি পরম করুণাময়ের জন্য চুপ থাকার মানত করেছি। অতএব আজ আমি কোন মানুষের সাথে কিছুতেই কথা বলব না’।
৩৩:৩৫ اِنَّ الۡمُسۡلِمِیۡنَ وَ الۡمُسۡلِمٰتِ وَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡقٰنِتٰتِ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الصّٰدِقٰتِ وَ الصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰبِرٰتِ وَ الۡخٰشِعِیۡنَ وَ الۡخٰشِعٰتِ وَ الۡمُتَصَدِّقِیۡنَ وَ الۡمُتَصَدِّقٰتِ وَ الصَّآئِمِیۡنَ وَ الصّٰٓئِمٰتِ وَ الۡحٰفِظِیۡنَ فُرُوۡجَهُمۡ وَ الۡحٰفِظٰتِ وَ الذّٰكِرِیۡنَ اللّٰهَ كَثِیۡرًا وَّ الذّٰكِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا ﴿۳۵﴾ان المسلمین و المسلمت و المؤمنین و المؤمنت و القنتین و القنتت و الصدقین و الصدقت و الصبرین و الصبرت و الخشعین و الخشعت و المتصدقین و المتصدقت و الصآئمین و الصٓئمت و الحفظین فروجهم و الحفظت و الذكرین الله كثیرا و الذكرت اعد الله لهم مغفرۃ و اجرا عظیما ﴿۳۵﴾
নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন।
৫৮:৩ وَ الَّذِیۡنَ یُظٰهِرُوۡنَ مِنۡ نِّسَآئِهِمۡ ثُمَّ یَعُوۡدُوۡنَ لِمَا قَالُوۡا فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّتَمَآسَّا ؕ ذٰلِكُمۡ تُوۡعَظُوۡنَ بِهٖ ؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۳﴾و الذین یظهرون من نسآئهم ثم یعودون لما قالوا فتحریر رقبۃ من قبل ان یتمآسا ذلكم توعظون بهٖ و الله بما تعملون خبیر ﴿۳﴾
আর যারা তাদের স্ত্রীদের সাথে ‘যিহার’ করে অতঃপর তারা যা বলেছে তা থেকে ফিরে আসে, তবে একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটি দাস মুক্ত করবে। এর মাধ্যমে তোমাদেরকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।
৫৮:৪ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَهۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّتَمَآسَّا ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَسۡتَطِعۡ فَاِطۡعَامُ سِتِّیۡنَ مِسۡكِیۡنًا ؕ ذٰلِكَ لِتُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰهِ وَ رَسُوۡلِهٖ ؕ وَ تِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ ؕ وَ لِلۡكٰفِرِیۡنَ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۴﴾فمن لم یجد فصیام شهرین متتابعین من قبل ان یتمآسا فمن لم یستطع فاطعام ستین مسكینا ذلك لتؤمنوا بالله و رسولهٖ و تلك حدود الله و للكفرین عذاب الیم ﴿۴﴾
কিন্তু যে তা পাবে না, সে লাগাতার দু’মাস সিয়াম পালন করবে, একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে। আর যে (এরূপ করার) সামর্থ্য রাখে না সে ষাটজন মিসকীনকে খাবার খাওয়াবে। এ বিধান এ জন্য যে, তোমরা যাতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন। আর এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা এবং কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
কোরআনের বর্ণনায় রোজা ও রমজান
পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে রোজার আলোচনা এসেছে, যেসব আয়াতে আল্লাহ প্রধানত রোজার বিধি-বিধানগুলো বর্ণনা করেছেন। নিম্নে রমজান ও রোজা সংক্রান্ত আয়াতগুলো বর্ণনা করা হলো।
১. রমজানের রোজা ফরজ : আল্লাহ প্রত্যেক সাবালক ও সুস্থ মুসলিম নর-নারীর ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর।
যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
২. অসুস্থ ব্যক্তির রোজার বিধান : কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হলে তার ব্যাপারে শরিয়তের বিধান হলো—‘রোজা নির্দিষ্ট কয়েক দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। এটা যাদের খুব বেশি কষ্ট দেয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদয়া—একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা।
যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে, তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণপ্রসূ যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪)
৩. কোরআন নাজিলের মাস রমজান : আল্লাহ রমজানে কোরআন অবতীর্ণ করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।
’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
৪. রোজার সময়সীমা : কতটুকু সময় রোজা রাখতে হবে আল্লাহ তা কোরআনে বলে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘রোজার রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ জানেন যে তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন।
সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ যা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কোরো। আর তোমরা পানাহার কোরো যতক্ষণ রাতের কৃষ্ণরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কোরো। তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তাদের সঙ্গে সংগত হইয়ো না। এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং এগুলোর নিকটবর্তী হইয়ো না। এভাবে আল্লাহ তাঁর নিদর্শনাবলি মানবজাতির জন্য সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা আল্লাহভীরু হতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)
৫. রোজা হজ-ওমরাহর প্রতিবিধান : হজ ও ওমরাহর সময় যদি ব্যক্তি কোনো বিশেষ পরিস্থিতির শিকার হয়, তবে রোজার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করতে পারবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরা পূর্ণ কোরো। কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও, তবে সহজলভ্য কোরবানি কোরো। যে পর্যন্ত কোরবানির পশু তার স্থানে না পৌঁছে তোমরা মাথামুণ্ডন কোরো না। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয় কিংবা মাথায় কষ্টদায়ক কিছু থাকে, তবে রোজা বা সদকা অথবা কোরবানি দ্বারা তার ফিদয়া দেবে। যখন তোমরা নিরাপদ হবে, তখন তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি হজের আগে ওমরাহ দ্বারা লাভবান হতে চায়, সে সহজলভ্য কোরবানি করবে। কিন্তু যদি কেউ তা না পায়, তবে তাঁকে হজের সময় তিন দিন এবং ঘরে ফেরার পর সাত দিন এই পূর্ণ ১০ দিন রোজা পালন করতে হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৬)
৬. রোজা ভুলে হত্যার প্রতিবিধান : রোজা পালনের মাধ্যমে ব্যক্তি অনিচ্ছাকৃত হত্যার দায় থেকে রেহাই পেতে পারে। ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো মুমিনকে হত্যা করা কোনো মুমিনের কাজ নয়, তবে ভুলবশত করলে তা স্বতন্ত্র; এবং কেউ কোনো মুমিনকে ভুলে হত্যা করলে একজন মুমিন দাস মুক্ত করবে এবং তার পরিজনকে রক্তপণ দেওয়াই বিধান, যদি না তারা ক্ষমা করে। যদি সে তোমাদের শত্রুপক্ষের লোক হয় এবং মুমিন হয়, তবে একজন মুমিন দাস মুক্ত করাই বিধান। আর যদি সে এমন এক সম্প্রদায়ভুক্ত হয় যার সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ, তবে তার পরিবারকে রক্তপণ দেওয়া এবং মুমিন দাস মুক্ত করাই বিধান। সে সামর্থ্য রাখে না, সে ধারাবাহিক দুই মাস রোজা পালন করবে। তাওবার জন্য এটা আল্লাহর ব্যবস্থা। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৯২)
৭. রোজা শপথ ভঙ্গের প্রতিবিধান : কেউ যদি শপথ ভঙ্গ করে তবে প্রতিবিধান হিসেবে রোজা রাখতে পারে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের বৃথা শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদের দায়ি করবেন না, কিন্তু যেসব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কোরো সেসবের জন্য তিনি তোমাদের দায়ী করবেন। অতঃপর এর কাফফারা ১০ দরিদ্রকে মধ্যম ধরনের খাবার দান, যা তোমরা তোমাদের পরিজনদের খেতে দাও, অথবা তাদের কাপড় দান বা একজন দাস মুক্তি এবং যার সামর্থ্য নেই তার জন্য তিন দিন রোজা পালন। তোমরা শপথ করলে এটাই তোমাদের শপথের কাফফারা, তোমরা তোমাদের শপথ রক্ষা কোরো। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করেন। যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কোরো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৮৯)
৮. রোজা জিহারের প্রতিবিধান : জিহার হলো স্ত্রীকে নিজের মায়ের সঙ্গে তুলনা করা। ইসলামের দৃষ্টিতে এটা অপরাধ। রোজার মাধ্যমে এই অপরাধের দায়মুক্তি ঘটে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা নিজেদের স্ত্রীদের সঙ্গে জিহার করে এবং পরে তাদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তবে একে অপরকে স্পর্শ করার আগে একটি দাস মুক্ত করতে হবে, তা দ্বারা তোমাদের উপদেশ দেওয়া যাচ্ছে। তোমরা যা করো আল্লাহ তার খবর রাখেন। কিন্তু যার এ সামর্থ্য থাকবে না, একে অন্যকে স্পর্শ করার আগে তাকে ধারাবাহিক দুই মাস রোজা পালন করতে হবে; যে তাতে অসমর্থ, সে ৬০ জন অভাবগ্রস্তকে খাওয়াবে। এটা এ জন্য যে তোমরা যেন আল্লাহ ও তাঁর রাসুলে বিশ্বাস স্থাপন করো। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত বিধান; অবিশ্বাসীদের জন্য আছে মর্মন্তুদ শাস্তি।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত : ৩-৪)
আল্লাহ সবাইকে রমজানের কল্যাণ দান করুন। আমিন
গুরুত্বপূর্ণ সিয়াম :
৫৮:৪ যিহার করলে তার শাস্তি স্বরুপ টানা দু মাস সিয়াম। অন্যান্য অপশন আছে।
৫:৯৫ হারাম অবস্থায় কোন প্রাণী হত্যা করলে তার শাস্তি স্বরূপ সিয়াম। (উল্লেখ্য এখানে সিয়াম কয়টা সেটা বলে দেওয়া হয়নি প্রাণী যেমন হবে তার ওপর নির্ভর করে সিয়ামের মেয়াদ গণনা হবে)। অন্যান্য অপশন আছে।
৫:৮৯ কঠিন শপথ করে ভঙ্গ করলে তার শাস্তি স্বরূপ সিয়াম। তিন দিনের সিয়াম। তবে অন্যান্য অপশন আছে।
৪:৯২ কোন মুমিন ব্যক্তি অন্য মোমিন ব্যক্তিকে অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করলে তার শাস্তি স্বরূপ সিয়াম টানা দুই মাস। তবে অন্যান্য অপশন আছে।
২:১৯৬ হজ পূর্ণ করতে না পারলে তার শাস্তি স্বরূপ সিয়াম। হজের মধ্যে তিন দিন। বাকি সাতটি হজ থেকে ফেরার পর। উল্লেখ্য এটা তাদের জন্য যারা মসজিদুল হারামের বাসিন্দা নয়। এই সর্বমোট 10 টি।
২:১৮৫ রমজানের সিয়াম। এক মাস। অন্য কোন অপশন নেই। সিয়ামের পরিবর্তে সিয়াম দিয়েই পূর্ণ করতে হবে।
২:১৮৪ নির্দিষ্ট কিছু দিনের সিয়াম। অপশন আছে। অসহায়কে খাবার খাওয়ায়ে তার বিনিময় করা যায়।
তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি সিয়াম মাসেরও হয় আবার নির্দিষ্ট দিনের হয়। দিনগুলো তিন ধরনের প্যাকেজ। তিন দিন সাত দিন এবং 10 দিন। আবার মাসের প্যাকেজ দুই ধরনের। একমাস এবং দুই মাস। তবে উল্লেখ্য বাকি সিয়াম সবগুলোই শাস্তি স্বরূপ কাফফারা স্বরূপ তবে ২:১৮৪ ও ১৮৫ কোন শাস্তি স্বরূপ সিয়াম নয় এটি মুত্তাকী বানানোর রেসিপি। একটি কিছুদিনের ঐতো গোনা সেই দিনগুলোর যেকোনো একটি প্যাকেজ। আরেকটি আরো ভালো মুক্তাকি বানানোর জন্য এক মাসের সিয়াম। যার কোন বিনিময় হয়নি কোন অপশন নেই। সিয়ামের পরিবর্তে সিয়াম। যে কয়টি দিন ছুটে যাবে পরবর্তী দিনগুলো থেকে তাকে পূর্ণ করে সম্পূর্ণ মেয়াদ টাকে পূর্ণ করতে হবে। তাহলে আল্লাহ কেন দুইটা আয়াত পরপর উল্লেখ করলেন অবশ্যই এটার মধ্যে গবেষণার দাবি রাখে। কারণ এক মাস ফিক্সড করে দিলে মেরু অঞ্চলের মানুষগুলো এই সিয়াম গুলো করতে পারতেন না। তাই আল্লাহ তাদের জন্য সে প্যাকেজগুলো থেকে কোন একটি দিন নির্ণয় করতে বলেছেন। আর আমরা যারা এই সমস্যায় পড়ছে না আমাদের জন্য একটা মাস সহজতর।